ঘি একটি শক্তিবর্ধক এবং উপকারী খাদ্য। বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে ঘি অনেক বড় একটি জায়গা দখল করে আছে। গরম ভাতের সাথে ঘি দিয়ে খেতে অনেক মজা লাগে। এই সুস্বাদু খাবার ব্যবহার করে তরকারি রান্না করলে তা অনেক সুস্বাদু হয়। ঘি যে শুধু খেতে মজা তা না, এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। বিভিন্ন শারীরিক প্রয়োজনে ঘি খাওয়ার নিয়মে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। আসলে নিয়ম মেনে খেলে এর দ্বারা অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। চুল পড়া সমস্যা দূর করতে ঘি অনেক ভালো কাজ করে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেলে ধীরে ধীরে চুল পড়া সমস্যার সমাধান হয়।
ঘি খাওয়ার উপকারিতা
-
ঘি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
-
এটি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা চিরতরে দূর করে।
-
ত্বকের সতেজতা বজায় রাখে।
-
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
-
দেহের প্রতিটি কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
-
মস্তিষ্কের কোষ সক্রিয় রাখে।
-
জয়েন্টে ব্যথা বা আর্থাইটিস সমস্যা দূর করে।
-
ওজন কমাতে সাহায্য করে।
-
রক্তে দূষিত কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
-
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
বাচ্চাদের ঘি দিলে বা দুগ্ধজাত খাবার ঠিক কতটা উপকারী হয় তা আপনাদের জন্য বিস্তারিত তুলে ধরবো-
ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
বাচ্চাদের জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প হতে পারে না। মায়ের দুধ থেকেই একটি বাচ্চা তার পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও অন্যান্য সব কিছু নিয়ে থাকে। কিন্তু, শিশু ধীরে ধীরে মায়ের দুধ খাওয়া কমিয়ে দিলে তাকে দুধের পুষ্টিগুণের সমপরিমাণ খাবার দিতে হয়, নইলে শিশুর শারীরিক ও স্বাস্থ্য বিকাশে সমস্যা হবে। এই সমস্যা থেকে ঘি একটি কার্যকরী উপাদান হিসেবে কাজ করে। কারণ ঘি তে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, চর্বি ও উন্নত ক্যালরি থাকে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
শিশুদের হজমশক্তি বাড়ায়
দই ও ঘি সকল খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হজমের কাজ করে থাকে। ঘি খেলে তা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্যকারী এনজাইম ও এর অণুজীবগুলোকে ক্রিয়ান্বিত করে। এর ফলে বাচ্চাদের পেটে থাকা বিভিন্ন দূষিত পদার্থ দূর করে অ্যাসিডিটি কমায় এবং হজমের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে। ঘিতে থাকা বুটিরিক এসিড বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
হাড়ের গঠন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
ঘি তে অনেক ভালো পরিমাণে মিনারেল যেমন পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জিংকসহ নানা উপাদান থাকে। এই উপাদানগুলো বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। ক্যালসিয়াম শিশুর দেহের হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। এই ছোট বয়স থেকেই দেহের হাড়ের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই সময় যদি গঠন প্রক্রিয়া দুর্বল হয়, তাহলে অটিজমসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। ভবিষ্যতে ঠিকমতো হাঁটাচলা করা ও অন্যান্য কাজ করার জন্য বাচ্চাদের এই বয়স থেকেই সুস্থ ও শক্তিশালী হাড়ের গঠন খুবই জরুরী। ঘি তে থাকা ভিটামিন ডি ও ভিটামিন কে ক্যালসিয়াম তৈরি করে।
কাশির সমস্যা দূর করে
বাচ্চারা প্রায়ই খুসখুসে কাশিতে ভুগে। এই কাশি অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। আবহাওয়া পরিবর্তন, পরিবেশের ধুলোবালির জন্য অনেক শিশু সহজেই আক্রান্ত হয়। তাই নিয়মিত পরিমাণ ঘি খেলে শুকনো কাশি দূর করা সম্ভব। এজন্য বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় হালকা গরম পানিতে দুই চামচ ঘি মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ঘি সহ অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিমাইক্রোবিয়াল রয়েছে যা ছোট থেকেই শিশুদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে ঘি তে থাকা এন্টিমাইক্রোবিয়াল (antimicrobial resistance) এর কারণে যদি কোনো রোগ থেকেও থাকে তাহলে তা ছড়ানো বন্ধ হয় অর্থাৎ শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে।
থাইরয়েড গ্রন্থি সচল রাখতে সহায়তা করে
মানুষের দেহে যেহেতু হরমোনের ভূমিকা অনেক বেশি তাই শিশুদের জন্য ওই সময় থেকেই তা উন্নত করতে নজর দিতে হবে। শরীরে হরমোন তৈরি হয় বিভিন্ন স্থানে থাকা গ্রন্থির মাধ্যমে। আয়োডিন নামক খনিজ উপাদানের কারণে এসকল গ্রন্থির পরিচালনা সম্ভব হয়। ঘি তে এই উপাদান প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২-৪ মাইক্রোগ্রাম পরিমাণ থাকে যা গলার ফোলাভাব কমায়, এর সাথে থাইরয়েড গ্রন্থি (thyroid gland) ও পিটুইটারি গ্রন্থি (pituitary gland) হতে হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শিশুর দৈহিক বিকাশে এটি সবচেয়ে বেশি সহায়ক।
ঘি আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার পাশাপাশি অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার।
Reviews
There are no reviews yet.